Skip to main content

Learn Finance and Tech

Goodbye EBL

চিঠি চালাচালির এক মান্ধাতা পদ্ধতির আজব ব্যাংক হচ্ছে ইস্টার্ণ ব্যাংক।
অন্যান্য ব্যাংকের ইন্টারনেট ব্যাংকিং এপ দিয়ে যেভাবে তাৎক্ষণিক FDR ও DPS করে ফেলা যায়, কিন্তু EBL স্কাইব্যাংকিং এপ থেকে FDR/DPS করা যায় না। আপনি ব্রাঞ্চে গিয়ে নির্দিষ্ট ফরম পূরণ করে তবেই FDR ও DPS করতে হবে।
সেই ফরমের হার্ডকপি তারা ব্রাঞ্চ থেকে কুরিয়ার সার্ভিসে পাঠাবে ঢাকায়। ব্রাঞ্চ থেকে ঢাকায় পৌঁছাতেই সময় চলে যায় কমপক্ষে দুইদিন থেকে তিনদিন। সারা বাংলাদেশ থেকে ঢাকায় জমা হতে থাকা এরকম হাজার হাজার ফরমগুলোর একটা একটা করে নিষ্পত্তি সম্পন্ন করা হয়।
ভাবা যায়, এই যুগেও আছে এমন কলঙ্কময় উদ্ভট পদ্ধতি!!!
FDR হবার পরে FDR এর এডভাইস কপি ঢাকা থেকে গ্রাহকের ব্রাঞ্চে এসে পৌঁছাতে আরো কয়েকদিন সময় লেগে যায়। অথচ অন্যান্য ব্যাংক তাদের ব্রাঞ্চ থেকেই কম্পিউটার প্রিন্ট দিয়ে FDR এর এডভাইস কপি তাৎক্ষণিক গ্রাহককে দিয়ে দেয়।
এবার সেই FDR ভাঙ্গবেন, যেতে হবে আবারো ব্রাঞ্চেই। সেখানে গিয়ে ফরম ফিলাপ করার করে সেই কাগজ তারা পাঠাবে ঢাকায়। তারপরেই আপনার FDR এর টাকা একাউন্টে ডিপোজিট হবে। ফলে এখানে সময় লেগে যায় আরো বেশ কয়েকদিন।
তাদের রয়েছে অসংখ্য জটিল রকমের গোলকধাঁধার মতো FDR স্কিম। তাদের ওয়েবসাইট থেকে FDR চার্ট ডাউনলোড দিয়ে PDF দেখলেই আপনার মাথা ঘুরে যাবে। তাছাড়া গ্রীণ জোনে থাকা দেশের প্রথম সারির অন্যান্য ব্যাংকগুলো ৩ মাস অন্তর মেয়াদের FDR-এ যে ইন্টারেস্ট % দিচ্ছে, সেখানে EBL দিচ্ছে ৩ ভাগের ১ ভাগ % রেইট।
ধরুন আপনি ভালো ইন্টারেস্ট % রেইট দেখে ৩৬৯ দিন মেয়াদের একটা FDR করলেন, সেটার ভালো ইন্টারেস্ট % রেইট এক বছর পরেই তারা অর্ধেক করে ফেলবে। তারপরে তারা নতুন FDR স্কিম বের করবে ৩৬০ দিন মেয়াদের, এটার ইন্টারেস্ট রেইট প্রায় ডাবল হয়ে থাকে পূর্বেরটার তুলনায়। অসচেতন পুরনো গ্রাহকরা এসব খেয়াল করেন না। ফলে সেই FDR এর মেয়াদ শেষ হবার পরে তিনি পূর্বের FDR ভেঙ্গে, নতুন FDR স্কিমে সেই টাকা আর রাখেন না, FDR আবারো সেই স্কিমেই নবায়ন হয়ে যায়। ফলে গ্রাহক বছর বছর কম ইন্টারেস্ট পেতে থাকেন। এভাবেই তারা তাদেরই নিজ গ্রাহকদের নিয়মিত ঠকিয়ে যাচ্ছে বছরের পর বছর ধরে।
তাদের ক্রেডিট কার্ডের ইন্স্যুরেন্স সার্ভিস বন্ধ করবেন? যেতে হবে ব্রাঞ্চেই। গিয়ে আবারো ফরম পূরণ করতে হবে। সেই ফরম তারা পাঠাবে ঢাকায়।
অথচ অন্যান্য সব ব্যাংকের ক্ষেত্রে তাদের হেল্পলাইনে ফোন করেই ক্রেডিট কার্ডের ইন্স্যুরেন্স সার্ভিস বন্ধ করা যায় খুব সহজভাবেই।
আমার MTB এর ভিসা সিগনেচার ও মাষ্টারকার্ড ওয়ার্ল্ড ক্রেডিট কার্ড এবং NRB ব্যাংকের ভিসা প্লাটিনাম ক্রেডিট কার্ডের ইন্স্যুরেন্স সার্ভিস আমি হেল্পলাইনে ফোন করেই বন্ধ করেছি। আমার স্ত্রী তার MTB অঙ্গনা ভিসা সিগনেচার ক্রেডিট কার্ডের ইন্স্যুরেন্স সার্ভিস বন্ধ করেছে হেল্পলাইনে ফোন দিয়েই।
অথচ আমার EBL ভিসা সিগনেচার ক্রেডিট কার্ডের ইন্স্যুরেন্স সার্ভিস ব্রাঞ্চে গিয়ে ফরম পূরণ করে তবেই বন্ধ করতে হয়েছে। কি জঘন্য দুরবস্থা!!!
এছাড়াও ব্রাঞ্চ কর্মকর্তার অসতর্কতা জনিত কারণে কোন ফরমে যদি একটা সিল/সিগনেচার কম থাকে, তাহলে ঢাকা থেকে সেই ফরম ফেরত পাঠানো হয় ব্রাঞ্চে। ব্রাঞ্চ থেকে প্রয়োজনীয় কারেকশন সম্পন্ন করার পরে সেই ফরম আবারো পুনরায় পাঠাতে হয় ঢাকায়।
ব্রাঞ্চে গিয়ে ডেবিট কার্ড ক্লোজ করা, ক্রেডিট কার্ড ক্লোজ করা, স্থায়ী ঠিকানা পরিবর্তন, বর্তমান ঠিকানা পরিবর্তন, মেইলিং এড্রেস পরিবর্তন, কার্ড এনডোর্স করা, এনডোর্স ক্যান্সেল করা, নমিনির নাম পরিবর্তন, নমিনির ঠিকানা পরিবর্তন, ফোন নাম্বার পরিবর্তন, ইমেইল পরিবর্তনসহ সমস্ত প্রকারের প্রত্যেকটা কাজের ক্ষেত্রে তারা হার্ডকপি ঢাকায় পাঠায়।
তারা হার্ডকপি ঢাকায় পাঠাক, সমস্যা নেই। কিন্তু স্ক্যানকপি পাঠিয়ে যেন গ্রাহকদের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করতে ত্বরান্বিত করা হয়। এই ব্যাপারটির প্রচলন খুব তাড়াতাড়ি শুরু করা দরকার। নয়তো তারা নিয়মিত গ্রাহক হারাতে থাকবে, ব্যাংকের সুনামে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
এভাবেই তাদের চিঠি চালাচালি চলতেই থাকে। বছর বছর ধরে চলা কুরিয়ার সার্ভিসকে কোটি টাকার খরচ দেয়ার মধ্যে কোন রহস্য লুকায়িত আছে, তা কে জানে।
ব্যাংকে গিয়ে নিয়মিত টাকা ডিপোজিট ও উত্তোলনের জন্যে EBL ভালো। ইন্টারনেট ব্যাংকিং লেনদেনের জন্যে ভালো। ডেবিট কার্ড ও ক্রেডিট কার্ড দিয়ে দেশি-বিদেশি কার্ড ভিক্তিক লেনদেনের জন্যে EBL ভালো।
তবে FDR ও DPS করার জন্যে EBL কোন অবস্থাতেই ভালো নয়। কারণ গ্রীণ জোনে থাকা দেশের প্রথম সারির অন্যান্য ব্যাংকগুলো EBL এর চেয়ে আরো ভালো ইন্টারেস্ট % অফার করে থাকে।
আসলে সব ব্যাংক সব কাজের জন্যে কখনো ভালো হয় না, ব্যাপারটি আমি খুব ভালো করেই জানি। তাই এই ব্যাপারটি মাথায় রেখেই ব্যাংক চুজ করার আসল নিয়ম। ব্যাংক একাউন্ট করার সময়েই গ্রাহককে নির্ধারণ করে নিতে হবে যে তিনি ঠিক কোন কাজের জন্যে ব্যাংকে একাউন্ট করতে চাইছেন।
যারা FDR ও DPS করতে চাইছেন, তারা এসব ব্যাপারগুলো অবশ্যই মাথায় রেখে তবেই সামনে এগুবেন এবং সঠিক ব্যাংক চয়েজ করে নিবেন।
অন্যান্য সেন্ট্রালাইজ ব্যাংকের কাজ নিষ্পত্তির পদ্ধতি: EBL এর মতো অন্যান্য সেন্ট্রালাইজ ব্যাংকগুলো গ্রাহকদের পূরণ করা ফরমগুলোতে সিল ও সিগনেচার দিয়ে তা স্ক্যান করে দ্রুত ঢাকায় পাঠিয়ে দেয়। ফলে সর্বোচ্চ পরেরদিনের ভেতরেই গ্রাহকদের কাজ খুব তাড়াতাড়ি সুসম্পন্ন হয়ে যায়।
এই ব্যাংকের সাথে এখন লেনদেন খুবই সীমিত করে এনেছি। ভবিষ্যতে কার্ড ভিক্তিক লেনদেন ছাড়া এই ব্যাংকের সাথে আর লেনদেনে যাবো না। চিঠি চালাচালির ব্যাংকের সাথে সম্পর্ক রাখতে সময়ের বেশ বিলম্ব হয়ে থাকে।

(এখানে দেয়া প্রথম স্ক্রিনশটে এই বছরের আজকে পর্যন্ত আমার সর্বমোট লেনদেন এবং দ্বিতীয় স্ক্রিনশটে আমার স্ত্রীর একাউন্টের সর্বমোট লেনদেন।)

Mohammed Azharull Haq Bhuyan | Post Link | 16 October 2024

  • Blog authors: Digest2025
  • Title: Goodbye EBL
  • Last updated: 

Comments

Banking Hacks by S M Salehur Rahman

Report Abuse