Skip to main content

Learn Finance and Tech

ক্রেডিট কার্ডের ইন্স্যুরেন্স

ক্রেডিট কার্ড শব্দটি ইংলিশে শুনতে সুন্দর শুনালেও বাংলায় শুনতে কিন্তু একদমই সুন্দর নয়। সহজ বাংলায় ক্রেডিট কার্ড মানেই হল ঋণ কার্ড।

যাই হোক, সেই ঋণ কার্ডের একটি ফিচার বাই ডিফল্ট চালু করানোই থাকে, তা হল কার্ডের ইন্সুরেন্স সার্ভিস। ক্রেডিট কার্ডের সর্বমোট বকেয়া বিলের উপরে ভ্যাটসহ সর্বমোট ০.৪০% হারে ইন্স্যুরেন্স চার্জ প্রয়োজ্য হয়ে প্রতি মাসে মাসে বিল জেনারেট হয়ে থাকে।

অর্থাৎ কেউ যদি ক্রেডিট কার্ড দিয়ে গত মাসে ১ লাখ টাকার শপিং করে থাকেন, তাহলে এই মাসে ইন্স্যুরেন্সের ০.৪০% চার্জসহ সর্বমোট বিল জেনারেট হবে ১ লাখ ৪০০ টাকা।\

বিল জেনারেট হবার পরে আপনি ৫০ হাজার ৪০০ টাকা পরিশোধ করে দিলেন। তাহলে আগামী মাসে সেই বকেয়া ৫০ হাজার টাকার সাথে সুদ সংযুক্ত হওয়ার পরে শুধুমাত্র ইন্স্যুরেন্সের চার্জই আবারো আসবে আরো প্রায় ২০০+ টাকা।

একটু খেয়াল করে দেখুন, আপনি ইতিপূর্বে ১ লাখ টাকার বিলে যেই ৪০০ টাকা ইন্স্যুরেন্স চার্জ দিলেন, সেই টাকারই বকেয়া ৫০ হাজার টাকায় নতুন করে ২০০ টাকা ইন্স্যুরেন্স চার্জ আবারো দিতে হল। এবার আপনি যদি সমস্ত বিল পরিশোধ করে দেন তাহলে দুই মাসে আপনাকে ১ লাখ টাকার উপরেই ইন্স্যুরেন্স চার্জ দিতে হল ৬০০+ টাকা। এভাবে হিসাব ধরলে আপনি ইন্স্যুরেন্স বাবদই ০.৪০% চেয়েও আরো বেশি মাত্রায় টাকা দিয়ে গেলেন।

বিশেষ করে যারা ক্রেডিট কার্ড দিয়ে EMI করে নিয়মিত বিভিন্ন প্রোডাক্ট কিনে থাকেন, তাদের পুরো EMI বিল পরিশোধ হওয়া পর্যন্ত হিসাব করে দেখুন যে, আপনি সর্বমোট কতো হাজার টাকা ইন্স্যুরেন্স চার্জ বাবদ দিয়ে গেলেন।

প্রত্যেক মাসে মাসে বছরের পর বছর ইন্স্যুরেন্স চার্জ বাবদ যে টাকা পরিশোধ করে যাচ্ছেন, বিনিময়ে কার্ডের ইন্স্যুরেন্সের যেই সুবিধা থাকে তা হল ক্রেডিট কার্ডের গ্রাহকের মৃত্যুর পরে কার্ডের নমিনি কর্তৃক ব্যাংকে আবেদন করা সাপেক্ষে বিভিন্ন যাচাই-বাছাইয়ের পরে কার্ডের সর্বমোট বকেয়া বিল ওয়েভ করে দেয়া হয় এবং সমপরিমাণ টাকা নমিনিকে দেয়া হয়ে থাকে।

এছাড়াও ইন্স্যুরেন্সের আওতায় কার্ডের ক্যাটাগরির উপরে আরো কিছু বাড়তি সুবিধা থাকে। যেমন এক্সিডেন্টে স্থায়ী পঙ্গুত্ব বরণে এককালীন একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা ব্যাংক থেকে ক্রেডিট কার্ডের গ্রাহককে দেয়া হয়ে থাকে।

তবে সমস্ত আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হবার পরে শেষ পর্যন্ত টাকা হাতে পেতে একটা সুদীর্ঘ নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে যেতে হয়। কারণ আপনার প্রাপ্য টাকা ব্যাংক দাবি করবে ইন্স্যুরেন্স প্রতিষ্ঠানের কাছে। সেই প্রতিষ্ঠান যাচাই-বাছাইয়ের পরে ব্যাংককে অর্থ প্রদান করবে। পরবর্তীতে ব্যাংক সেই অর্থ বেনিফিশিয়ারিকে প্রদান করবে।

আপনি কবে মৃত্যুবরণ করবেন, কিংবা এক্সিডেন্টে পঙ্গুত্ব বরণে সেই প্রতীক্ষার অবসান হওয়ার পরে আপনার নমিনি সেই টাকার জন্যে ব্যাংকে দৌড়ঝাঁপ করে টাকা উত্তোলন করার প্রচেষ্টায় থাকবে। আর দেশের ইন্স্যুরেন্স সার্ভিসের যেই খারাপ রিভিউ, তাতে টাকা হাতে পাওয়া আসলেই বেশ কষ্টকর দুঃসাধ্যের ব্যাপার।

কিছু কিছু ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের ক্ষেত্রে ব্যাংকের হেল্পলাইনে কল দিয়ে ইন্স্যুরেন্স সার্ভিস তাৎখনিক বন্ধ করা যায়। আবার কিছু ব্যাংকের ক্ষেত্রে হেল্পলাইনে কল করার পরে ৩ কর্মদিবস সময় নেয়। আবার কিছু ব্যাংকের ক্ষেত্রে ব্রাঞ্চে গিয়ে সুনির্দিষ্ট ফরম ফিলাপ করে আবেদন করার পরে ব্রাঞ্চ সেই আবেদনপত্রটি কার্ড ডিভিশনে পাঠায়। কার্ড ডিভিশন ফরমে থাকা সিগনেচার ও কার্ডের তথ্য যাচাইয়ের পরে কার্ডের ইন্স্যুরেন্স সার্ভিস বন্ধ করে দেয়।

তাই ক্রেডিট কার্ড হাতে পেয়ে এক্টিভ করার সাথে সাথেই আপনার সর্বপ্রথম কাজ হল কার্ডের ইন্স্যুরেন্স সার্ভিসটা চিরতরে বন্ধ করে দেয়া, যদি আপনি বছরের পর বছর ধরে সর্বমোট বিলে অতিরিক্ত ০.৪০% হারে টাকা দিয়ে যেতে না চান তবেই।

Mohammed Azharull Haq Bhuyan | Post Link | 27 May 2023

  • Blog authors: Digest2025
  • Title: ক্রেডিট কার্ডের ইন্স্যুরেন্স
  • Last updated: 

Comments

Banking Hacks by S M Salehur Rahman

Report Abuse